ইসলামে মেয়েদেরকে পর্দা করার কথা বলা হয়েছে। ইদানিং সেই পর্দার অংশ হিসেবে হিজাব ব্যবহৃত হয়। তবে যারা নতুন হিজাব করা শুরু করেছেন তাদের অনেক সমস্যায় পরতে হয়। তাদের সুবিধার্থে দেয়া হলো কিছু তথ্য। দিনের বেলায় হালকা রঙের হিজাব (মিষ্কি গোলাপি, আকাশী, হালকা সবুজ, কমলা, হলুদ) পরার চেষ্টা করবেন।কনট্রাস্ট করতে চাইলে বেসিক কালারের টুপি পরে বিভিন্ন ডিজাইনের কালারফুল স্কার্ফ পরতে পারেন।
আজকাল বাজারে অ্যানিম্যাল প্রিন্ট, ডোরা কাটা প্রিন্টের কালারফুল স্কার্ফ পাওয়া যায়। ওড়না বা স্কার্ফ স্টাইলে স্কার্ফ পরতে চাইলে, যে রঙের পোশাক পরবেন তার সম্পূর্ণ বিপরীত রঙের স্কার্ফ দিয়ে হিজাব পরতে পারেন। অর্থাৎ ডার্ক কালারের ড্রেস পরলে হালকা রঙের অথবা হালকা রঙের ড্রেসের সাথে ডার্ক কালারের ওড়না দিয়ে হিজাব পরবেন। এতে সুন্দর দেখাবে। জর্জেট, শিফন, সিল্কের হিজাবগুলো পার্টিতে পরলে খুব ভালো ভাবে ম্যানেজ করা যায়। সিনথেকিক, টিস্যু কাপড়ের হিজাব পরার চেষ্টা করবেন না। কারণ এটা ফুলে থাকে, অথবা ফেসে যায়। জুতা, ব্যাগের রঙের সাথে মিলিয়েও হিজাব পরতে পারেন। যদি শাড়ির সাথে হিজাব পরা হয়, তাহলে ব্লাউজের গলা ছোট দেয়াটাই ভালো। ডিজাইনে তারতম্য আনার জন্য বোট গলা, সামান্য গোল গলার ডিজাইন দিতে পারেন। ব্লাউজের হাতা ফুল স্লিভ হবে।
এমন ভাবে হিজাব পরতে হবে যেন গলার নিচ পর্যন্ত ঢেকে যায়। হিজাব ব্যবহারের ক্ষেত্রে পোশাকের রং ও ধরণকে মাথায় রেখে হিজাব বাছাই করতে হবে। পোশাকের রঙের সাথে মিলিয়ে বা বিপরীত রঙের হিজাব ব্যবহার করতে পারেন। যদি পোশাকটি বেশী নকশা করা বা প্রিন্টের হয় তবে সে ক্ষেএে একরঙা হিজাব নির্বাচন করুন। আবার পোশাকটি হালকা কাজের বা একরঙা হলে তার জন্য বেছে নিন বিপরীত রঙের বা নকশা করা ও পিন্টের হিজাব। হিজাব পড়ার আগে অবশ্যই পোশাকের হাতের দিকে নজর দিন। পোশাকের হাতা যেন অবশ্যই ফুলহাতা বা থ্রি কোয়াটার হাতা হয় । কারণ হিজাবের সাথে ছোট হাতার পোশাক একদমই বেমানান । বাজার ঘুরে কটন, লেস, জর্জেট ও সাটিনসহ নানা ধরনের কাপড়ের হিজাব দেখা যায় । কাপড়ের মান ও নকশার উপর ভিওি করে এগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বেছে নিন নিজের বাজেটের মাঝে।
হিজাব শুধু পর্দা করার ক্ষেত্রেই না, নারীদের সৌন্দর্য বর্ধনেও পিছিয়ে নেই। ইন্টারনেটে রয়েছে বিভিন্ন পেজ, সাইট, ভিডিও যেখানে নানাভাবে হিজাব পরার পদ্ধতি ছবিসহ বর্ননা করা থাকে । চাইলেই হিজাব পড়ার আগে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন এসব পেজগুলোতে । সেখান থেকেই পেয়ে যাবেন আপনার রুচিমত একটি স্টাইল। প্রতিদিনের কর্মস্থলে আর স্কুল কলেজে তো আছেই, আজকাল অনেক বিয়ের অনুষ্ঠানে কণেকে হিজাব পড়ে উপস্থিত হতে দেখা যায় । তাই বুঝতেই পারছেন প্রতিনিয়ত হাল ফ্যাশনের সাথে তাল মিলিয়ে হিজাবও কিন্তু পিছিয়ে নেই । তাই নতুন ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে বাজার ঘুরে আপনিও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দমত হিজাবটি। আর পর্দা করার পাশাপাশি নিজেকে দিতে পারেন ফ্যাশানেবল একটি লুক। আর নিজেকে করে তুলতে পারেন মার্জিত আর অনেকটাই আলাদা ।
একটা সময় ছিল যখন নারীরা পর্দা করার উদ্দেশ্যে বোরকার সাথে হিজাব ব্যবহার করতেন। তবে বর্তমানে হিজাব শুধু গুটিকয়েক নারীর মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ফ্যাশন ট্রেন্ড হিসাবে ছড়িয়ে পড়েছে সব বয়সের নারী ও তরুনীদের মাঝে ।
হিজাব যেমন পর্দা করার জন্য উপকারি, ঠিক তেমনি এর রয়েছে আরও অনেক উপকারি দিকও। বাইরে বের হলে আপনার ত্বক এবং চুলের সব থেকে বড় শত্রু হল ধূলাবালি ও ক্ষতিকর সূর্যকিরণ। আপনার ত্বক এবং চুলকে রক্ষা করার একটি ভাল উপায় হতে পারে হিজাব ব্যবহার। শুধু বোরকার সাথে নয়, হিজাব পরতে পারেন শাড়ি, কামিজ, কুর্তা বা অন্য যে কোনো পোশাকের সাথে। স্কুল কলেজ সহ সকল কর্মস্থলে মেয়েরা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন হিজাব।